সহজেই ঘরে বসে নাগ ফজলি আম ক্রয় করুন ।
ক্রয় করতে ক্লিক করুন ক্রয় করতে ক্লিক করুন
Nag fozli mango buy sell bangladesh, Nag fozli mango buy, Mango by online from sapahar naogaon , nag fozli mango buy online, nag fozli , nakfozli

সহজেই ঘরে বসে নাগ ফজলি আম ক্রয় করুন ।
ক্রয় করতে ক্লিক করুন ক্রয় করতে ক্লিক করুন
Nag fozli mango buy sell bangladesh, Nag fozli mango buy, Mango by online from sapahar naogaon , nag fozli mango buy online, nag fozli , nakfozli

নওগাঁর বরেন্দ্র অঞ্চল ধামইরহাট উপজেলা। বহুকাল থেকেই এ উপজেলায় বাড়ির আঙ্গিনা, খোলা মাঠ ও এর আশেপাশে চোখে পড়ে নাগ ফজলি জাতের আম। স্বাদে-গুণে অনন্য ও মিষ্টতায় ভরা এ আমের ঘ্রাণ জিহ্বাতে এক অসাধারণ অনুভূতির জন্ম দেয়। ফলে এলাকায় গ্রামের গৃহস্থরা তাদের পরিবারের চাহিদা পূরণের জন্য বিশেষ করে বাড়ির আঙ্গিনা ও খোলা জায়গায় নাগ ফজলি আমের চারা রোপণ করেন। ঢাকা টাইমমের প্রতিবেদক অরিন্দম মাহমুদ-এর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বিস্তারিত।
এলাকায় ‘নাগ ফজলি’ আমের নামকরণ নিয়ে বেশ মতভেদ লক্ষ্য করা যায়। কেউ কেউ বলেন, আমের নিচের অংশ দেখতে অনেকটা সাপের ফনার মতো হওয়ায় এর উৎপত্তিস্থল ভারতের মুর্শিদাবাদ ও কলকাতার হিন্দু সম্প্রদায় ‘নাগ ফজলি’ আমকে পূজা করতেন। এরপর থেকে অনেকের ধারণা করেন ‘নাক ফজলি’ আমের প্রকৃত নাম ‘নাগ ফজলি’। আবার অনেকের মতে (হাতবদল হয়ে বাংলাদেশে এসে) আমের নিচের অংশে কিছুটা নাকের মত উঁচু থাকায় ‘নাক ফজলি’ হিসেবে পরিচিতি পায়.
নাগ ফজলি আম উপজেলার ধামইরহাট ইউনিয়নের রামরামপুর, পিড়লডাঙ্গা, চাকময়রাম, কালুপাড়া, ফার্সিপাড়াসহ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছোট-বড় বিভিন্ন বাগানে ব্যাপকভাবে চাষাবাদ করা হয়। নাগ ফজলি চাষে এখানকার মাটি উপযোগী হওয়ায়। উপজেলার গণ্ডি পেরিয়ে এ আমের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।
সাবেক কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেলিম রেজা’র নিজ উদ্যোগে ২০১৮ সালে জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে নাগ ফজলি আমকে ধামইরহাটের একমাত্র ব্র্যান্ডিং আম হিসেবে ঘোষণা করেন।
বর্তমানে এ আমের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় উপজেলার গন্ডি পেরিয়ে পত্নীতলা, বদলগাছি উপজেলা, সাপাহার, জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আমবাগানগুলোতে জায়গা করে নিয়েছে নাগ ফজলি আম।
নাগ ফজলি আমের সঠিক ইতিহাস এখনো অজানা থেকে গেলেও আম চাষি ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, বন বিভাগের তৎকালীন এমএলএসএস আফতাব হোসেন ভান্ডারির হাত ধরে ১৯৬৭ সালে নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার ভান্ডারপুর এলাকায় নাগ ফজলি আমের প্রথম বিস্তার লাভ করে।
আরো জানা গেছে, ভান্ডারপুর এলাকার তৎকালীন জমিদার খুকুমনি লাহিড়ী নাগ ফজলি আমের জাত সংগ্রহ করেন পার্শ্ববর্তী ভারতের কলকাতা থেকে। অপর জমিদার বিনোদ কুমার লাহিড়ী প্রতিবছর তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তীর্থে ভারতে যেতেন। দেশে ফেরার পথে তিনি বিভিন্ন ধরনের ফলদ গাছের সঙ্গে নাগ ফজলি জাতের চারা নিয়ে নিজ বাগানের রোপণ করেন। তারপর ধীরে ধীরে এ এলাকায় সাধারণ মানুষের কাছে নাগ ফজলি জাতের আমের পরিচিতি লাভ করে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ জেলার ধামইরহাট ও বদলগাছী উপজেলায় প্রথম এ আমের চাষ শুরু করা হয়। এই জাতের আম দেখতে লম্বায় প্রায় চার ইঞ্চি আর চওড়ায় দেড় ইঞ্চি হয়ে থাকে। কাঁচা নাগ ফজলি আম মিষ্টি হওয়ায় শিশুরা ঝাল-লবণ ছাড়াই খেতে বেশ পছন্দ করে। এছাড়াও মিষ্টতার দিক দিয়ে এই জাতের আম ল্যাংড়া ও আম্রপালি আমের সমতুল্য। প্রত্যেকটি আমের ওজন ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়।
এ আমের চামড়া পাতলা ও বিচি সরু খেতেও সুস্বাদু। নাগ ফজলি আম ৮ জুন গাছ থেকে নামানোর উপযুক্ত সময়। এবং ২০ জুনের মধ্যে এ আমের প্রকৃত স্বাদ বজায় থাকে। এর জীবনকাল ১২০ থেকে ১৩০ দিন। ফজলি আমের তুলনায় প্রায় পঁচিশ থেকে ত্রিশ দিন আগে পাকে। তাই আগাম জাতের আম বলা হয়। আম পাকার পরও শক্ত থাকে ফলে দীর্ঘদিন ধরে ঘরে রেখে খাওয়া যায়।
সোমবার (১৪ জুন) সকালে উপজেলার কালুপাড়া এলাকার সাতানা গ্রামে নাগ ফজলি আমের বাগান থেকে আম নামানো দেখা যায়। সেখানে জগৎনগর গ্রামের ফারুক হোসেনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, স্থানীয় হায়দার মাষ্টারের কাছ থেকে তিনি ৫০ শতাংশ জমিতে ৩৫ হাজার টাকায় একটি আমের বাগান কেনেন। বর্তমান তিনি বাগান থেকে নামানো আম জয়পুরহাট জেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় ১ হাজার ৬শ টাকা মণ দরে বিক্রি করছেন।
অপর আম চাষি ও বিক্রেতা আব্দুল হান্নান দেওয়ান বলেন, দুই শতাংশ জমির উপরে নাগ ফজলি আমের বাগান রয়েছে তার। তিনি ২০১১ সাল থেকে নিজ বাগানের আম ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রয় করেন। এবার তিনি ৬০ টাকা কেজি দরে পাইকারি বাজারে বিক্রি করছেন নাগ ফজলি আম।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌফিক আল জুবায়ের বলেন, এবছর উপজেলায় প্রায় ৬৭৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ করা হয়েছে। তারমধ্যে ৩২০ হেক্টর জমিতেই শুধু নাগ ফজলি আমের চাষ করা হয়েছে।
তিনি এও বলেন, নাগ ফজলি আম ধামইরহাট উপজেলার একমাত্র ব্র্যান্ডিং আম। ক্যাপ পদ্ধতির মাধ্যমে গুণগতমান বজায় রেখে উৎপাদন ও বিপণন বৃদ্ধি করে বহির্বিশ্বে পরিচিতির জন্য উপজেলা কৃষি অফিস নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জকে পিছনে ফেলে নতুন রাজধানী হিসেবে আবির্ভাব হয়েছে নওগাঁর। বর্তমানে দেশের মোট উৎপাদিত আমের সিংহভাগই আসে নওগাঁ থেকে যা এতোদিন ছিল রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের দখলে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সারাদেশে মোট আমের উৎপাদন ছিলো প্রায় ২৩ লাখ ৭২ হাজার টনের কিছু বেশি। এর মধ্য শুধুমাত্র নওগাঁ থেকে আসে ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৪৮৬ টন আম। যেখানে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে এসেছে ২ লাখ ৭৫ হাজার টন এবং রাজশাহী থেকে এসেছে ২ লাখ ১৩ হাজার ৪২৬ টন। অথচ ২০১৬-১৭ অর্থবছরেও নওগাঁতে আমের মোট উৎপাদন ছিলো ১ লাখ ৬১ হাজার ৯১০ টন। সুতরাং ভাবতেই পারছেন , আম উৎপাদনে নওগাঁ জেলা ঠিক কতটা এগিয়ে।
গত সাত বছরের যেখানে নওগাঁয় মাত্র ৬ হাজার হেক্টর জমিতে আম বাগান ছিল। সেখানে বর্তমানে জেলায় প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে আম বাগান গড়ে উঠেছে। স্থানীয় ও সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এক ফসলি জমিতে ধানসহ অন্যান্যে ফসল চাষের চেয়ে আম চাষে লাভজনক হওয়ায় আগামীতে নওগাঁয় আম চাষে বিপ্লব ঘটতে চলেছে। জেলায় গুটি, ল্যাংরা, ফজলি, ক্ষিরসাপতি, মোহনভোগ, আশ্বিনা, গোপালভোগ, হাঁড়িভাঙ্গা, আম্রপালি, বারি-৩, ৪ ও ১১, নাগফজলি, গৌড়মতি উন্নত জাতের আম চাষ হচ্ছে। এ ছাড়াও দেশীয় বিভিন্ন জাতের আম চাষ করা হয়ে থাকে। এ সকল আমের বিশেষ জাতের মধ্যে আম ‘নাগফজলি’। এই নাগফজলি বিশেষ করে পত্নীতলা, বদলগাছী, ধামইরহাট ও মহাদেবপুরে চাষ হয়ে থাকে। এই আম প্রথমে ১৪/১৫ বছর আগে বদলগাছীতে চাষ শুরু হলেও বর্তমানে পত্নীতলায় বেশি চাষ হয়ে থাকে।
নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের থেকে জানা গেছে, নওগাঁ জেলার পোরশা, সাপাহার, বদলগাছী, পত্নীতলা, মান্দা, ধামইরহাট, বরেন্দ্র ভূমি হিসেবে পরিচিত। এ অঞ্চলে পানির স্তর মাটির অনেক নিচে হওয়ায় বছরের বেশি সময় ধরে জমি পতিত থাকে। আমন ধান ছাড়া ইরি-বোরো ধান চাষ হয় না। বর্ষ মৌসুমে ঠাঠা এ অঞ্চলের অধিকাংশ জমিতে শুধু মাত্র আমন ধান চাষ হয়ে থাকে। ধানের চেয়ে আম চাষে বেশি লাভ নওগাঁর ১১টি উপজেলার মধ্যে ঠাঠা বরেন্দ্রভূমির এ সব অঞ্চলে দিনদিন শতশত বিঘা জমিতে উন্নত (হাইব্রিড) জাতের আম বাগান গড়ে উঠছে। গত সাত বছর আগে জেলা মাত্র ৬ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ করা হতো। এ বছর জেলায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ করা হয়েছে। নওগাঁর আম সুস্বাদু হওয়ায় গত দু’বছর থেকে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।
রাজশাহী বিভাগীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মনিটরিং ও মূল্যায়ন কর্মকর্তা আহসান হাবিব খাঁন জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ ও নাটোর জেলার মধ্যে নওগাঁয় আমের যে ভাবে বাগান গড়ে উঠছে তা বলাবাহুল্য। মাটির কারণে স্বাদেগুণে নওগাঁর আমের তুলনা চলে না। বর্ষ মৌসুম ছাড়া আর কোন সময় ফসল হয় না এমন জমিকে এক ফসলি জমি বলা হয়ে থাকে। এক ফসলি রয়েছে এমন উপজেলা নওগাঁর পোরশা, সাপাহার ও নিয়ামতপুরে সরকারের নির্দেশে স্বল্প সেচ চাহিদা সম্পন্ন ফসল উৎপাদন করা। এর মধ্যে সবচেয়ে আম চাষে লাভ হওয়ায় কৃষকদের আম চাষে উদ্বুত্ত করা হচ্ছে।

আমের নাম ‘নাগ ফজলি' নাকি নাক ফজলি ?? কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ও আমচাষিদের কাছ থেকে জানা যায়, এই আমের আসল নাম হচ্ছে ‘নাক’ ফজলি। গঙ্গাতীরবর্তী কাশী বা বেনারস ভারতের প্রধান আম উৎপাদন এলাকাগুলোর মধ্যে অন্যতম। বিনোদ কুমার লাহিড়ীর মাধ্যমে বদলগাছী উপজেলায় প্রথম বিস্তার লাভ করে নাক ফজলি। অনেকে মনে করেন, এ আমের নিচের দিকে নাকের মতো হওয়ায় এর নামকরণ হয়েছে নাক ফজলি। জোড় কলমের মাধ্যমে এ আমের চারা রোপণ করার ১ থেকে ২ বছরের মধ্যে গাছে মুকুল আসে।
কৃষি বাতায়নের তথ্য মোতাবেক
এ বিষয়ে জমিদার বিনোদ কুমার লাহিড়ীর উত্তরসূরি নাতি শ্রী নিরঞ্জন লাহিড়ী বলেন, আমার দাদু বিনোদ কুমার লাহিড়ী বহুকাল আগে তীর্থভূমি কাশীতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে মুর্শিদাবাদের নবাবের বিখ্যাত আমবাগানে উদ্ভাবিত অতি উৎকৃষ্ট জাতের আম নাক ফজলি আমের কয়েকটি চারা বাংলাদেশে প্রথম এনেছিলেন। দাদু কয়েকটি নাক ফজলি আমের চারা সংগ্রহ করে ভান্ডারপুরে নিজস্ব আমবাগানে রোপণ করেন।
Copyright ©
Nag Fozli Mango- নাগ ফজলি আম | Powered by Blogger
Design by Lizard Themes | Blogger Theme by Lasantha - PremiumBloggerTemplates.com